এবার আন্দোলনের সময় একাত্মতা জানাতে গিয়ে যে ৫৭ জন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন সরকার তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, আন্দোলনের সময় একাত্মতা জানাতে গিয়ে যে ৫৭ জন দেশে ফিরেছেন সরকার তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। সরকার দূতাবাসগুলোতে প্রবাসীদের সহায়তায় শক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রবাসীদের অভিযোগের কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের তা জানাতে হবে। প্রবাসী কল্যাণে সেবামূলক কাজ না করলে বদলি করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের বিমানবন্দরে সেবার মানোন্নয়ন ইতোমধ্যে করা হয়েছে। আরেকটি সেবা যেটা আমরা চালু করতে যাচ্ছি সেটি হচ্ছে, রেমিট্যান্স যোদ্ধারা দেশে আসলে বিমানবন্দরে ভিআইপি সেবা পাবেন। একজন ভিআইপি এয়ারপোর্টে যেসব সুবিধা পান, লাউঞ্জ ব্যবহার ছাড়া আমরা সবই করার সুবিধা দেব। একজন ভিআইপি যখন এয়ারপোর্টে যান তখন তার লাগেজ নিয়ে একজন সঙ্গে থাকেন, চেকইন করার সময় সঙ্গে একজন থাকেন, ইমিগ্রেশন করার সময় পাশে একজন থাকেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের কর্মীদের টার্গেট করেছি। ইউরোপের কর্মীদের পরে করব। প্রথম স্তরে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া এবং ফেরত আসা একজন কর্মী ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাবেন। লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দেওয়ার বিষয়ে আমরা পরে চিন্তা করছি, এটা অনেক পরের কাজ। আগামী দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে আমরা যেটা করব, বিমানবন্দরে যাওয়ার পর একজন কর্মীর যে অসহায় অবস্থা তৈরি হয় সেটি দূর করব।
আসিফ নজরুল বলেন, কর্মী কোন গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন, চেকইন কীভাবে করবেন, ফর্ম পূরণ করা লাগলে কীভাবে করবেন, ইমিগ্রেশনে কোনো কাগজ চাইলে কীভাবে সেটি করবেন এসব কাজে নিয়োজিত থাকবে বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক। দরকার পড়লে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ট্রেনিং দিয়ে নতুন লোক নিয়োগ করব। আমরা এটি দুই সপ্তাহ থেকে এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করব। একজন প্রবাসী যেন কোনো অবস্থাতেই এয়ারপোর্টে হয়রানির শিকার না হন, অপমানিত বোধ না করেন এই ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স থাকবে। আমরা অবশ্যই এটি নিশ্চিত করব।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ যখন বিক্ষোভে উত্তাল, সে সময় তাতে সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস্তায় বিক্ষোভে নামেন বাংলাদেশিরা। পরে ২০ জুলাই সন্ধ্যায় দুবাই, শারজাহ ও আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভের সময় ৫৭ বাংলাদেশিকে আটক করে আমিরাতের পুলিশ।
এ ঘটনার দুদিন পর দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং সম্পদহানীর মত অভিযোগে তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন স্থানীয় আদালত। পরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে ৫৭ জন বাংলাদেশি প্রবাসীকে ক্ষমা করে দেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।